হাসনাত-সারজিসের বাসায় ২০০ ও ১০০ কোটি টাকা পাওয়ার দাবি, সত্যতা জানালো রিউমর স্ক্যানার

 হাসনাত-সারজিসের বাসায় ২০০ ও ১০০ কোটি টাকা পাওয়ার দাবি, সত্যতা জানালো রিউমর স্ক্যানার

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে গত অক্টোবর থেকে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক ও জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহকে নিয়ে একাধিক পোস্ট ও ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে। যেখানে দাবি করা হয়েছে, সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহর বাসা থেকে যথাক্রমে ১০০ ও ২০০ কোটি টাকা পাওয়া গেছে।

এমন দাবিতে ফেসবুকে একাধিক পোস্ট শেয়ার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ‘স্বাধীন বাংলাদেশ ২৪/৭’ নামের একটি ব্লগসাইটেও এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহর বাড়িতে ২০০ ও ১০০ কোটি টাকা পাওয়ার তথ্যটি সঠিক নয়, বরং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. তারিকুল ইসলামের দেয়া একটি বক্তব্যের খণ্ডিত অংশ প্রচার করে আলোচিত ভুয়া দাবিটি উত্থাপন করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে বিপুল টাকা উদ্ধারের দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভিডিওতে এক ব্যক্তিকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। চতুর্দিক থেকে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। সারজিস সারজিস আলমের বাসায় ২০০ কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছে, হাসনাতের বাসায় ১০০ কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছে। যে অবিশ্বাসের রাজনীতি শুরু করা হয়েছে সেই রাজনীতির দিকে আমাদের সচেতন থাকতে হবে।’ এছাড়াও সেই ব্যক্তিকে অন্তর্বর্তী সরকারকে নিয়েও নানা সমালোচনা করতে দেখা যায়।

পরবর্তীকালে বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে মো. তারিকুল ইসলাম (Md Tarikul Islam) নামের একটি ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ পাওয়া যায়। যেখানে গত ১৯ অক্টোবর ‘অবিলম্বে হামলাকারী খুনিদের গ্রেফতার করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ওই ভিডিওর ৯ মিনিট থেকে ৯ মিনিট ৪২ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশের সঙ্গে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে।

অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, বক্তব্য দেয়া ওই ব্যক্তি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. তারিকুল ইসলাম। সেই ভিডিওতে ৯ মিনিট থেকে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে এ লড়াই শেষ হওয়া পর্যন্ত আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। চতুর্দিকে ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু হয়েছে। সারজিসের বাসায় ২০০ কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছে, হাসনাতের বাসায় ১০০ কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছে। অবিশ্বাসের রাজনীতি শুরু করা হয়েছে। সে রাজনীতির বিরুদ্ধে আমাদেরকে সচেতন থাকতে হবে। আপনাদেরকে বুঝতে হবে, এই অভ্যুত্থানে যারা নেতৃত্ব দিয়েছে, তাদের শক্ত নৈতিক মানদণ্ড না থাকলে তারা কখনোই এই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিতে পারতো না।’

এমন বক্তব্যে এ কথা স্পষ্ট যে, তিনি সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহর বাসায় ২০০ ও ১০০ কোটি টাকা পাওয়া গেছে বলে দাবি করেননি, বরং তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেছেন। সেই সঙ্গে বলেছেন, এই অভ্যুত্থানে যারা নেতৃত্ব দিয়েছে, তাদের শক্ত নৈতিক মানদণ্ড না থাকলে তারা কখনোই এই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিতে পারতো না।

অন্যদিকে সারজিস আলম কিংবা হাসনাত আবদুল্লাহর বাসা থেকে কোনো অর্থ উদ্ধারের তথ্য গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য অন্য কোনো সূত্র থেকেও পাওয়া যায়নি। সুতরাং, তাদের বাসা থেকে যথাক্রমে ২০০ ও ১০০ কোটি টাকা পাওয়া গেছে বলে মো. তারিকুল ইসলাম মন্তব্য করেছেন শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।

আপনার মতামত লিখুনঃ

Post a Comment

Previous Post Next Post