বাবা চকলেট নিয়ে আসত, এখন আসে না কেন?’ কাতর প্রশ্ন শিশু শাম্মির
ছয় বছরের শিশু শাম্মি আক্তার। এ বয়সে দুরন্তপনায় বাড়ি মাতিয়ে রাখার কথা থাকলেও সে নীরব, নিস্তেজ। শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। আর ঘুরেফিরে খোঁজে বাবাকে। কাজ শেষে বাবা অনেক রাত করে বাসায় এলেই সারাক্ষণ বাবাকে নিয়ে খুনসুটিতেই সময় কাটত তার। এখন বাবা নেই। তাই মায়ের কাছে প্রশ্ন ‘আমার বাবা নেই কেন? আমার বাবা কোথায় গেছে? আমার বাবা কখন ফিরবে? আমার বাবাকে এনে দাও। আমি বাবার সঙ্গে লুকোচুরি খেলব। বাবা আমার জন্য চকলেট নিয়ে আসত, এখন কেন আনে না?’ যদিও তাকে জানানো হয়েছে তার বাবা আর বেঁচে নেই।সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দিন গত ৫ আগস্ট বিকেলে পুলিশের গুলিতে মারা যান শিশু শাম্মি আক্তারের বাবা শামসু মোল্লা (৫২)। তিনি ফরিদপুর শহরের পূর্ব খাবাসপুর শান্তিবাগ এলাকার বাসিন্দাশুধু শিশু শাম্মি আক্তার নয়, স্বামীকে হারিয়ে দু’চোখে যেন অন্ধকার দেখছেন শামসু মোল্লার স্ত্রী মেঘলা বেগম (৩১)। কেননা পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন শামসু মোল্লা। এখন সামনের দিনগুলো কীভাবে চলবে, মেয়েকে কীভাবে বড় করবেন, পড়ালেখাই বা করাবেন কীভাবে, তা ভেবে দিশাহারা ও কাতর হয়ে পড়েছেন মেঘলা বেগম।
শামসু মোল্লা পেশায় একজন পরিবহন বাসচালক ছিলেন। তিন শতাংশ জমির ওপর একটি বাড়িতে সপরিবারে বসবাস করতেন। শামসু-মেঘলা দম্পতির একমাত্র মেয়ে শাম্মি আক্তার। সে স্থানীয় বায়তুল আমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী।
মেঘলা বেগম বলেন, ‘আমার আর কিছুই রইলো না। সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। মাথার ওপর কোনো ছাদ থাকল না। সেই-ই ছিল আমাদের একমাত্র সম্বল। দুনিয়াতে আমাদের আর দেখার কেউ নেই।’
Post a Comment